কোনো দেশই এত দ্রুত দারিদ্র্যের হার কমাতে পারেনি: প্রধানমন্ত্রী

দেশই

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের কোনো দেশই বাংলাদেশের মতো দ্রুত দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত মেয়র, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর এবং কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত যা প্রয়োজন তা হলো জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়া। গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা। আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলেই এদেশের মানুষ অন্তত পেয়েছে যে সরকার জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে। যে কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মেয়র, কাউন্সিল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। আমাদের প্রতিটি উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা গ্রামকে লক্ষ্য করে। কিন্তু আমাদের সব পরিকল্পনাই তৃণমূলের লক্ষ্য নয়। কারণ আমি মনে করি দেশকে উন্নত করতে হলে আগে আমাদের সব গ্রামকে উন্নত করতে হবে, গ্রামের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করতে হবে, তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে, তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে হবে। .

‘শিল্পায়নের কথা চিন্তা করলেও আমাদের দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়িয়ে পণ্য উৎপাদনের কথা ভাবতে হবে; আমাদের নিজস্ব বাজার তৈরি করতে। জনগণ যাতে সেই যোগ্যতা অর্জন করতে পারে আমরা তা নিশ্চিত করতে কাজ করছি,’ বলেন শেখ হাসিনা।

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জনগণকে উন্নত সেবা প্রদান, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য। আমরা আগেই ঘোষণা করেছি আমার গ্রাম আমার শহর। অর্থাৎ গ্রামের মানুষ নাগরিকের সব সুবিধা পাবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকায় আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘আজ গত ১৫ বছরে আমি অন্তত দাবি করতে পারি যে বাংলাদেশ একটি পরিবর্তিত বাংলাদেশ। একজন ব্যক্তি যার বয়স আজ ১৫ বছর, সে হয়তো ভাবতেও পারবে না ১৫ বছর আগে- অর্থাৎ ২০০৯ সালের আগে বাংলাদেশ কেমন ছিল! সেখান থেকে আজকের বাংলাদেশে অনেক পরিবর্তন এসেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে; পাঁচ গুণ বেড়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, আমরা দারিদ্র্যের হার পেয়েছি ৪১.৫১ শতাংশ। আমরা এটিকে 18.7 শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল অন্তত আমরা এটাকে ১৬ বা ১৭ শতাংশে নামিয়ে আনব। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এটি একটি গ্রহণযোগ্য অবস্থান। কোভিড-১৯ মহামারী না হলে আমরা সেটা করতে পারতাম। আর এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি; প্রতিটি খাবারের দাম বেড়েছে। তেলের দাম বেড়েছে, জ্বালানির দাম বেড়েছে, গ্যাসের দাম বেড়েছে, পরিবহন খরচ বেড়েছে—এসব না থাকলে আমরা আরও দ্রুত এগোতে পারতাম। আমরা আমাদের দারিদ্র্যের হার আরও কমাতে পারব।’

অত্যন্ত দরিদ্রদের সংখ্যা ২৫ শতাংশের উপরে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যা আমরা ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছি। আমি মনে করি পৃথিবীর কোনো দেশই এত দ্রুত চরম দারিদ্র্যের হার কমাতে পারেনি। এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে, আওয়ামী লীগ করতে পারে। কারণ আমরা খুব নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিকল্পনা করেছি এবং আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি এবং পরিকল্পনার সাথে কাজ করেছি। আমাদের লক্ষ্য এখন বাংলাদেশে কেউ ভূমিহীন, গৃহহীন বা অত্যন্ত দরিদ্র থাকবে না।’

জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। জনসেবা নিশ্চিত করতে পারলে আগামীতে ভোটের চিন্তা থাকবে না। মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করবে এবং বিশ্বাস করবে।’

Back To Top