চেয়ারম্যানরা সম্পদ অর্জনে এমপিদের পেছনে ফেলেছেন

চেয়ারম্যান

পাঁচ বছরে অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধিতে সংসদ সদস্যদের পেছনে ফেলেছেন উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। সংসদ সদস্যদের সম্পদ বৃদ্ধির হার ছিল সর্বোচ্চ ৩.৬৫ শতাংশ, যেখানে একজন চেয়ারম্যানের সম্পদ বৃদ্ধির হার ছিল ৪,২০০ শতাংশের বেশি।

অন্যদিকে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের মধ্যে ১১৭ কোটিপতি রয়েছেন। যেখানে ৫৬০ চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ৯৪ জনই কোটিপতি। এছাড়া এবারের নির্বাচনে ৪৩৫ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ৬১১ জন ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ১৭ জন এবং ৬ কোটিপতি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সোমবার ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ী, ৬৭ শতাংশ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং ২৪ শতাংশ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ব্যবসাকে পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. মোঃ ইফতেখারুজ্জামান বলেন, উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত করা নির্বাচন কমিশন, এনবিআর ও দুদকের দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, প্রথম দফায় মন্ত্রী-এমপিদের ১৩ জন স্বজন নির্বাচিত হতে দেখেছি। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন দলভিত্তিক হলেও নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে দলভিত্তিক কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বেশিরভাগ প্রার্থীই ‘আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র’ এবং দলের স্থানীয় নেতৃত্বের সমর্থন রয়েছে। বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও স্থানীয় প্রার্থীদের ঠেকাতে পারেনি দলটি। আগ্রহী প্রার্থীরা স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন।

টিআইবি বলছে, প্রথম ধাপের ১৫২টি উপজেলার মধ্যে ১৪৪ প্রার্থীর হলফনামা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন, বাকি ৮টিতে নেই। ১৫২টি উপজেলার তিনটি নির্বাচনের প্রায় ৪ হাজার ৮০০ হলফনামায় দেওয়া আট ধরনের তথ্যের বহুমাত্রিক ও তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের হস্তক্ষেপ তুমুল বিতর্কের বিষয় হলেও এবার স্বজনদের মনোনয়ন নিয়ে বিতর্ক চলছে। প্রথম দফায় মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন- ১৩ জন। প্রার্থী হওয়ায় ভাইয়েরা এগিয়ে; খালা, চাচাতো ভাই, জামাই, ভাইয়ের ছেলেদের তালিকা করা হয়েছে।

বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ঘোষণাকে উপেক্ষা করে প্রথম দফায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। জামায়াতের ২২ নেতা যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তারা পরে দলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

Back To Top