জিয়াউর রহমান বাকশালি সদস্য ছিলেন, ওবায়দুল কাদের

জিয়াউর

বাকশাল কোনো দল নয়, এটি ছিল জাতীয় দল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হন। এখন বিএনপি নেতারা সেই বাকশালকে অপমানে পরিণত করতে চাইছেন- বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ দুপুরে ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব যখন বলেন বাকপটু শাসন। আমি ফখরুল সাহেবকে বলবো- বাকশাল কোন দল নয়। জাতীয় দল ছিল। কৃষক শ্রমিক আওয়ামীলীগ। এখন এটিকে বাকশাল নামক শ্লেষে পরিণত করতে অনেকেরই সমস্যা হয়েছিল। আমি ফখরুল সাহেবকে বলব- বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, আপনার নেতা জিয়াউর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হন। তুমি কি এর উত্তর দিবে? আমি এটা আরো দুবার বললাম এবং কোন উত্তর পাইনি। অপ্রয়োজনীয় ঝগড়া আপনার চেহারা উন্মোচিত করবে।

এদিকে বিএনপির ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমে দেখলাম- বিএনপি তাদের ভারতবিরোধী অবস্থান পুনর্বিবেচনা করবে। বিরোধিতা ছাড়া মধ্যম ভূমি গ্রহণ করা সম্ভব কি না। তাদের সামনে কোনো ইস্যু নেই, তারা এমন কিছু নিয়ে আসে যা দেখানোর জন্য আছে। শেষ পর্যন্ত গণঅভ্যুত্থান থেকে লিফলেট বিলি করতে তাদের আসতে হয়েছে।


বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অভাব নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণতন্ত্রের অভাব কোথায়? অভাবের কারণ কি? বাংলাদেশ বাংলাদেশ হিসেবেই চলবে। বাংলাদেশে একটা নির্বাচন হয়েছে, সেই নির্বাচনে বিএনপি নেই, সেটা আজ অনেকের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন। নির্বাচন যে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে তা সত্য। ভোটার উপস্থিতি 42% শতাংশের বেশি। সংসদে বিরোধী দলগুলো সমালোচনা করছে, আমরা তাদের মুখ বন্ধ করিনি। সংসদের বাইরে যারা বিরোধী দলে আছেন- বিএনপি সভা-সমাবেশ করতে গিয়ে মুক্ত স্টাইলে কথা বলছে। ২৮ অক্টোবর তারা যা করেছে। নির্বাচন বর্জনের পর তাদের বিরুদ্ধে কোনো দমন-পীড়ন হয়নি।

আজ অনেক দেশে গণতন্ত্রের দাবি- ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমন করতে গিয়ে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের অনেক নামকরা দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রবক্তাদের হত্যা ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন অধ্যাপকও এই বর্বরতার শিকার হন। এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে জানান, তাদের ওপর রাসায়নিক স্প্রে করা হয়েছে। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ বিএনপির সঙ্গে এমন আচরণ করেনি। বিএনপি যেখানে খুশি সেখানে মিটিং করেছে। সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। তাহলে গণতন্ত্রের অভাব কোথায়? আমি যদি বলি অনেক দেশের তুলনায় আমরা গণতন্ত্রে উদ্বৃত্ত।

র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, নৈশভোজের পর সাংবাদিকদের সামনে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সঠিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে কি না, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বললে তিনি বুঝতে পারবেন। তিনি মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তা প্রত্যাহার করতে বলতে পারেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার প্রশ্নে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ড. জানতে চাই- বিশ্বের কোন দেশ অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারে? ফেডারেল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া কি পারবে? সব ওয়েবসাইটে এটা আছে. আপনার যা জানা দরকার, কেন প্রবেশ করবেন?

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন নিয়ে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ৯ বছর বিদেশে প্রবাসের পর দেশে এসে সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, তেতুলিয়া থেকে কুতুবদিয়া হয়ে সাধারণ মানুষের কাছে ছুটে গেছেন। হতাশ ও দিশেহারা মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুর উত্তর। বঙ্গবন্ধুর জনগণ ছিল এদেশের সাধারণ মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এদেশের সাধারণ মানুষ। তিনি আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং সমগ্র জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে আজ এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কেন হয়েছে? সরকারের ধারাবাহিকতা এবং নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতার কারণে ড. এই দুই কারণে বাংলাদেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়ে পরিণত হয়েছে।

এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন।

Back To Top