মন্ত্রীরা সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ না করে ভারতের তোষামোদে ব্যস্ত: রিজভী

মন্ত্রীরা সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ না করে ভারতের তোষামোদে ব্যস্ত: রিজভী

সীমান্ত হত্যা: সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী ডামি সরকার’ সীমান্তে নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে একটি শব্দও উচ্চারণের সাহস দেখায়নি। উল্টো মন্ত্রীরা ব্যস্ত ভারতকে তোষামোদে।

রিজভী বলেন, নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন- ‘এ বিষয়ে এখন কথা বলতে চাই না’। নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন- ‘এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা! এ নিয়ে আলোচনার কী আছে? আরেক মন্ত্রী বললেন, ‘নো কমেন্ট’।

তিনি বলেন, বিএসএফ কর্তৃক সীমান্ত হত্যাকে একজন মন্ত্রী কীভাবে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলতে পারেন? ভারত সীমান্ত দখল করে হত্যাযজ্ঞ চালালেও আমরা কিছু বলতে পারব না। কয়েক বছর আগে এক আওয়ামী মন্ত্রী বলেছিলেন, ভারতের বিরুদ্ধে কিছুই বলা যাবে না! এটা হচ্ছে তাবেদার ‘আওয়ামী ডামি’ সরকারের নতজানু নীতি। তারা ক্ষমতার জন্য দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিক্রি করতেও দ্বিধা করে না।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসকে) অনুযায়ী ২০২৩ সালে বিএসএফ ৩০ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। প্রাণহানির পাশাপাশি ৩১ জন বাংলাদেশিকে বিএসএফের হাতে মারাত্মকভাবে নির্যাতন ও পঙ্গু করা হয়েছিল। সীমান্তে পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করলে শেখ হাসিনার সেজদা সরকার প্রতিবাদ করে না, বরং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে লুটপাট, হামলা, ভাংচুর এমনকি ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার দাস-দাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা কি স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার নমুনা? ভারত পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার এবং বাংলাদেশের সাথে স্থল সীমানা ভাগ করে নেয়। আর শ্রীলঙ্কার সাথে সাগর সীমানা। এই সব দেশের সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ মোতায়েন রয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের ৫টি দেশের সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে কোনো নিরীহ মানুষের প্রাণহানির খবর নেই।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, তিনি (ওবায়দুল কাদের) এক মুখে দুই কথা বলেন। এই দ্বৈততার মধ্যেই আসল সত্য উদয় হয়। আওয়ামী লীগের সমাবেশে তিনি বলেন- ‘কোনো বিদেশি শক্তি আমাদের সরকার বসায়নি’। একই সভায় তার ভাষণের আরেকটি অংশে তিনি বলেন- ‘ভারত নির্বাচনে শক্তভাবে দাঁড়িয়েছে, এটা দরকার ছিল’। আবার তিনি আরেক বৈঠকে বলেছেন- ‘নির্বাচনের সময় ভারত পাশে দাঁড়িয়েছিল, এটা মানতেই হবে’। আবারও তিনি সাংবাদিকদের সামনে বলেছেন- ‘শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি অবিশ্বাসের সব দেয়াল ভেঙে দিয়েছেন’।

ওবায়দুল কাদেরের বক্তৃতায় স্পষ্ট প্রমাণিত হয়- ভোট ছাড়াই প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ভারতের মদদে তারা আবার ক্ষমতা দখল করেছে। ভারতের নায়ক হয়ে ওঠা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিপর্যয়কর শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বিএনপির এই নেতা বলেন, জনসমর্থন ছাড়া শেখ হাসিনার স্বৈরাচার ভারতকে খামখেয়ালী, নজিরবিহীন ও নিষ্ঠুর ধূর্ত রাজার মতো খুশি করতে ব্যস্ত।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতের গোলামী করলেও এদেশের জনগণ ভারতের গোলামীর শৃঙ্খল পরবে না। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের বীর জনগণের যে কোনো ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধের ঐতিহ্য রয়েছে। ভারতের মানুষের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। তবে আমাদের আপত্তি ভারতের শাসকদের নীতি ও নীতি নিয়ে।

তাই দলমত নির্বিশেষে ভারতীয় এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ড.

সীমান্ত হত্যা

সীমান্ত হত্যা সীমান্ত হত্যা সীমান্ত হত্যা

Back To Top