আমদানি করা ভারতীয় আলু পচে যাচ্ছে

আমদানি করা ভারতীয় আলু পচে যাচ্ছে

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আনা ভারতীয় আলু তীব্র গরমে পচে যাচ্ছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন আমদানিকারকরা। এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিনই দেশে আলু আমদানি হচ্ছে।

স্থানীয় আমদানিকারক ও বন্দরের কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা জানান, বন্দরে হিমাগারের ব্যবস্থা না থাকায় আলুসহ যেকোনো কাঁচামাল আমদানি করতে গিয়ে এ অবস্থা হচ্ছে। বেশ কয়েকদিন ধরে হিলিতে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। প্রতিদিন তাপমাত্রা প্রায় 40 ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে গুদামের ভেতরে বস্তায় রাখা আলু গরমে পচে রস বের হচ্ছে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে আমরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, দেশে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকার আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছে। ফলে বন্দরে আমদানিকারকরা প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আলু আমদানি করছেন। প্রতিদিন তারা আলু আমদানি করে দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করে।

আমদানির পর ভারতীয় ট্রাক থেকে আলুর বস্তা আনলোড করে সংরক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। বিক্রয়ের জন্য 2/3 দিনের স্টক আছে। বর্তমানে গরমের কারণে বাইরে থেকে পাইকাররা কম আসছে। আবার তীব্র গরমে তা পচে যাচ্ছে। এ অবস্থায় আলু নিয়ে চিন্তিত আমদানিকারকরা। তাদের লাভ তো দূরের কথা, এখন লোকসান গুনতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত আমদানিকারকদের প্রণোদনার মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতি পূরণ না হলে দেশে পণ্য সংকটের সময় পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত হবেন। আমি মনে করি, বিষয়টি সরকারের খতিয়ে দেখা দরকার।

বন্দরে আমদানি করা ভারতীয় আলু প্রতি কেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর বন্দরের আশপাশের বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা। তবে ভারতীয় আলু কিনতে ক্রেতাদের আগ্রহ কম। তারা দেশি আলু কিনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

বন্দরের আমদানিকারক প্রতিনিধি সিরাজ হোসেন বলেন, দেশে আলুর দাম চড়া। তাই আমরা ভারত থেকে আলু আমদানি করছি। কিন্তু সম্প্রতি হেলিসহ সারাদেশে তীব্র গরমে বস্তায় রাখা আলু গরমে পচে যাচ্ছে। প্রতি বস্তায় 2/3 কেজি নষ্ট আলু তোলা হয়। আলু আমদানি মানেই এখন আর্থিক ক্ষতি। আবার ভারতে গত কয়েকদিন ধরে দাম বেড়েছে কেজিতে ২/৩ টাকা। বন্দরে হিমাগারের ব্যবস্থা থাকলে এই ক্ষতি হতো না।

পৌর শহরের বাসিন্দা আসাদুর রহমান জানান, ডাঙ্গাপাড়া-চাটনী সড়কের পাশে ভারতীয় পচা আলু ফেলা হচ্ছে। এতে আমাদের যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে। এমনিতেই তীব্র গরমে হাসফাস অবস্থা। তার উপরে, গন্ধ আরও বিরক্তিকর। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের খতিয়ে দেখা দরকার।

এদিকে হেলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হেলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক জানান, হেলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু আমদানি করা হচ্ছে। প্রতিদিনই আলু আসছে। আলু একটি পচনশীল পণ্য হওয়ায় আমদানিকারকদের শুল্ক রাজস্ব আদায় সাপেক্ষে দ্রুত মুক্তি দিয়ে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে নিয়ে যেতে সহায়তা করা হচ্ছে। তবে বন্দর এলাকায় আলুসহ কাঁচা পণ্য রাখার হিমাগারের ব্যবস্থা থাকলে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতি হতো না।

Back To Top